আন্তর্বর্তী সরকার মেট্রোরেলের নতুন লাইনের অগ্রাধিকার নিয়ে নতুন করে পর্যালোচনা করবে, যা মানুষের উপকারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। ঢাকা মহানগরী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় যানজট নিরসনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নির্ধারিত মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের (ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট—এমআরটি) লাইনের অগ্রাধিকার নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।
বর্তমানে জানা যাচ্ছে, যে লাইনটি আগে বাস্তবায়ন করা উচিত ছিল, সেটি অগ্রাধিকার তালিকার শেষ দিকে রয়েছে, এবং যে লাইনটি পরে করা সম্ভব, সেটি আগে কার্যকর হচ্ছে। এমআরটির নতুন লাইনের প্রাক্কলিত ব্যয় নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, বিশেষ গোষ্ঠীর সুবিধা দেওয়ার জন্য এমআরটির নতুন লাইনের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছিল, যেখানে মানুষের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন লাইনের অগ্রাধিকার পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এমআরটির নতুন লাইনের অগ্রাধিকার পর্যালোচনা শুরু করেছে। বিশেষত এমআরটি লাইন-৫ (সাউদার্ন রুট) নিয়ে আলোচনা চলছে, যা হেমায়েতপুর থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, লাইন-২-এর আগে বাস্তবায়ন করা জরুরি।
এমআরটি লাইন-২ গাবতলী থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত, যেখানে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত একটি ব্রাঞ্চ লাইনও থাকবে। পরিকল্পনা কমিশনের মতে, লাইন-২ অধিক গুরুত্বপূর্ণ, তবে সেটিকে অগ্রাধিকার তালিকার শেষে রাখা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, লাইন-৫-এর অধীনে বর্তমান কোনো বাণিজ্যিক বা শিল্পাঞ্চল নেই এবং এটি চলমান লাইন-৬-এর কাছাকাছি। অন্যদিকে, লাইন-২ নিউমার্কেট, ধানমন্ডি ও পুরান ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাকে মতিঝিলের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
গত বছরের এপ্রিলে পরিকল্পনা কমিশনের এক বৈঠকে এমআরটি লাইন-৫-এর চেয়ে লাইন-২-এর অগ্রাধিকার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল, তবে তা প্রকাশ্যে আনা হয়নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন অগ্রাধিকারের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, নতুন এমডি নিয়োগের পর মেট্রোরেলের সমস্ত লাইনের পর্যালোচনা করা হবে। তিনি জানান, পূর্ববর্তী সরকারের প্রকল্পগুলোতে জনগণের স্বার্থের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
পরিকল্পনা কমিশন জানাচ্ছে, এমআরটির রুটগুলো পুনর্বিবেচনা ও যাচাই করা দরকার, কারণ আগের অনুমানগুলো বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মেট্রোরেলের নির্মাণ খরচ পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে কম খরচে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব।
অবশ্যই, নতুন করে পর্যালোচনা করে সব লাইনের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা উচিত, যা দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং জনগণের স্বার্থকে সামনে রেখে হতে হবে।
Post a Comment