এখনো পাঠ্যবই পরিমার্জনের কাজ শেষ হয়নি, যার ফলে নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এক মুদ্রণকারী নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন, পাণ্ডুলিপি এখনও মুদ্রণকারীদের হাতে পৌঁছায়নি এবং পরিস্থিতি 'ক্রাইসিস' পর্যায়ে রয়েছে। তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে সমস্যায় পড়ছেন এবং সময়ও কম।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা আশা করছেন, মাসের শেষের মধ্যেই পরিমার্জনের কাজ সম্পন্ন করে মুদ্রণকারীদের হাতে পাণ্ডুলিপির সিডি পৌঁছে দিতে পারবেন। বর্তমানে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাঠদান চলছে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর কথা ছিল। তবে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে নতুন শিক্ষাক্রম কার্যত বাতিল হয়ে গেছে।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছর প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত নতুন পাঠ্যবই দেওয়া হবে, তবে চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির জন্য পুরোনো শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বই বিতরণ করা হবে। বিশেষভাবে, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির জন্য ২০১১ সালের এবং ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের বই দেওয়া হবে।
পুরোনো শিক্ষাক্রমের বইগুলোতে কিছু বিষয়বস্তু পরিবর্তন করা হচ্ছে। যদিও ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের বইগুলো ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো এখন পরিমার্জন করা হচ্ছে। এতে ৪১ জন ব্যক্তি যুক্ত রয়েছেন।
নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ের সংখ্যা কম ছিল, তবে পুরোনো শিক্ষাক্রমের বইয়ের সংখ্যা বেশি। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিকে একেকটি শ্রেণির জন্য ১০টি বিষয় ছিল, কিন্তু পুরোনো শিক্ষাক্রমে বিষয় সংখ্যা ২৩।
এনসিটিবির কর্মকর্তাদের মতে, পাঠ্যবইগুলোতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু বইয়ে অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি বা দেয়ালে আঁকা ছবি সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলা, ইতিহাস, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের প্রচ্ছদে এই গ্রাফিতি অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পাশাপাশি, পাঠ্যবইয়ের পেছনের পৃষ্ঠায় শেখ হাসিনার ছবির পরিবর্তে নতুন কিছু চিরন্তন বাণী যুক্ত করা হবে।
লেখক রাখাল রাহা জানিয়েছেন, পরিমার্জনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং তারা আশাবাদী যে, মাসের মধ্যেই সব পাণ্ডুলিপির সিডি মুদ্রণকারীদের হাতে পৌঁছে যাবে। এনসিটিবি চেয়ারম্যান এ কে এম রিয়াজুল হাসান জানান, এবারের মোট বইয়ের সংখ্যা ৪০ কোটি, যা শিক্ষার্থীদের সময়মতো সরবরাহের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
Post a Comment