}; শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ, তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ, তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ


সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের ছয় সদস্যের নামে ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত রাজউকের প্লট বরাদ্দে অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাবেক বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তাদের চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। 

Gen Alpha News - Current News - Emergency News - Political news - authentic News - news 24/7 - footbal news - crecket - chenema news - viral news - trendy news

রাজধানীর পূর্বাচলে শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলসহ রাজউকের সকল অবৈধ বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিটের বিষয়ে হাইকোর্ট আজ আদেশের দিন ধার্য করেছে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলের জন্য দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ আজ আদেশের জন্য দিন ঠিক করেছে। মামলাটি সেই অনুযায়ী কার্যতালিকায় ছিল।

১০ সেপ্টেম্বর, শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলসহ রাজউকের সব অবৈধ বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দাখিল করা হয়। এই রিটটি সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন করেছেন।

অন্য আইনজীবীরা ছিলেন: রেজাউল ইসলাম, আল রেজা মো. আমির, গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ হারুন, বেলায়েত হোসেন সোজা, কামরুল ইসলাম রিগান, হাসান মাহমুদ খান, শাহীনুর রহমান শাহীন এবং জিল্লুর রহমান।

রিটে অবৈধ বরাদ্দের সঙ্গে জড়িত এবং সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়। এছাড়া, এসব বরাদ্দের বিষয়ে তদন্তের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন সাবেক বিচারপতিকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশনারও আবেদন করা হয়।

রিটের বিবাদী হিসেবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, পূর্বাচল প্রকল্প পরিচালক, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী উল্লেখ করা হয়।

রিটকিারী আইনজীবী মিসবাহ উদ্দীন বলেন, 

রাজউকের (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) আলোচিত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে স্বয়ং নিজের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্লট নিয়েছেন তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। প্লট বরাদ্দ পাওয়াদের তালিকায় আরও আছেন-শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার দুই ছেলেমেয়ে। ২০২২ সালে তারা প্লট বুঝে পান। পরে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অতিগোপনীয় বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া খোদ রাজউকেরই অনেকে এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ১০ কাঠা আয়তনের প্লট নিয়েছেন। প্রস্তাবিত কূটনৈতিক জোনে সব প্লট একত্রে সন্নিবেশিত করার সুযোগ দেয় রাজউক।

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার খবরের সূত্র ধরে অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দীন জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা নিজেকে অসহায় এবং নিঃস্ব বলে দাবি করলেও তিনি নিজের নামে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। পূর্বাচলে প্রস্তাবিত কূটনৈতিক জোনের ২৭ নম্বর সেক্টরে ২০৩ নম্বর রোডে তার প্লট নম্বর ০০৯। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট রাজউক তার নামে বরাদ্দপত্র ইস্যু করে, যা ধানমন্ডির ৫৪ সুধা সদনের ঠিকানায় পাঠানো হয়।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ফাইলগুলো রেকর্ডরুমে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। হাসিনার প্লট বরাদ্দের ফাইলের ওপর বড় ইংরেজি হরফে লেখা রয়েছে ভি-৩, পাতা ১৪১। ফাইলটিতে তার স্বাক্ষরযুক্ত আবেদনপত্র, বরাদ্দপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ অন্যান্য কাগজপত্রও সংরক্ষিত রয়েছে।

রাজউকের উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফের সই করা চূড়ান্ত বরাদ্দপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কাঠাপ্রতি ৩ লাখ টাকা হিসেবে ১০ কাঠার প্লটের মোট মূল্য ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলো।’ শেখ হাসিনা ছাড়াও তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও ১০ কাঠা করে প্লট নিয়েছেন। তাদের প্লট নম্বর যথাক্রমে ০১৫ এবং ০১৭। জয়ের নামে প্লটের বরাদ্দপত্র ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর ইস্যু করা হয়, এবং ওই বছরের ১০ নভেম্বর প্লটের মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। পুতুলের নামে ১০ কাঠার প্লটের বরাদ্দপত্র ২ নভেম্বর ইস্যু করা হয়, যা তৎকালীন উপপরিচালক হাবিবুর রহমানের সই রয়েছে।

শুধু শেখ হাসিনা ও তার সন্তানরাই নয়, পূর্বাচল প্রকল্পে ১০ কাঠা করে প্লট নিয়েছেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার ছেলেমেয়েও। তাদের নামেও রাজউকের আইন ও বিধি অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব প্লটের বরাদ্দ চ্যালেঞ্জ করে এই রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। প্লটগুলো ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডের একই জায়গায় অবস্থিত, যেখানে শেখ রেহানার প্লট নম্বর ০১৩, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের প্লট নম্বর ০১১ এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর প্লট নম্বর ০১৯।

Post a Comment

Previous Post Next Post